উত্তরদিনাজপুর

সংসারের অভাব অনটনকে হার মানিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ৪৭৬ নম্বর পেয়ে মুখ উজ্জ্বল করল কল্যাণী

অভাব অনটন তাদের নিত্য সঙ্গী। তবুও দারিদ্র‍্যতাকে হার মানিয়ে এবছর উচ্চমাধ্যমিকে ৪৭৬ নাম্বার পেয়ে শুধু নিজের গ্রামের নাম নয় সে তার বিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করেল উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ পার্ব্বতী সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্রী কল্যানী বর্মন। এতো ভালো নাম্বার পাওয়ার পরেও উচ্চশিক্ষার পথে কাটা হয়ে দাড়াচ্ছে অর্থ। সেই দুশ্চিন্তাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে কল্যানী বর্মনের পরিবারের সদস্যদের কাছে। কারন কল্যানী আগামী দিনে ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা করে একজন আদর্শ শিক্ষিকা হতে চায়। 

কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ভান্ডার গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিন শেরগ্রাম গ্রামের কৃষিজীবী জগদীশ বর্মনের মেয়ে কল্যানী বর্মন এবার পার্ব্বতী সুন্দররী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। কৃষিজীবি পরিবারের মেয়ে হবার জন্য তাকে সংসারের থেকে শুরু করে মাঠে কৃষি কাজ পর্যন্ত করতে হয়েছে। দিনে পড়াশোনার তেমন সময় না হলেও সে রাতেই বেশির ভাগ সময় পড়াশোনা করতো। পড়াশোনার জন্য তার বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। তার এক ভাই ও এক বোন কল্যানী বড় ও তার ভাই ছোট। বাবা মা পড়াশুনা কিছুই না করার মতো। তবু নিজে আদর্শ শিক্ষিকা হবার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করার ফলেই তার এই সাফল্য। সে এবারে কালিয়াগঞ্জ থেকে ছাত্রীদের মধ্যে প্রথম হয়েছে।

এবিষয়ে ওই ছাত্রী কল্যাণী বর্মণ জানায়, তার এই সাফল্যের পিছনে যেমন তার বাবা মার হাত রয়েছে, তেমনি হাত রয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। তাদের প্রচেষ্টায় সে এই সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে।

কল্যানীর বাবা জগদীশ বর্মন জানান, মেয়ের উচ্চ শিক্ষার জন্য তার কাছে আর্থিক স্বচ্ছলতা নেই। সে এক জন কৃষিজীবী মানুষ। তার মেয়ে বাড়ির কাজ ও মাঠের কাজ করে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই সাফল্য পেয়েছে। তার সাফল্যে তিনি খুব আনন্দিত। কিন্তু দুশ্চিতাও পিছু ছাড়ছে না কারন আগামী দিনে তার মেয়ের পড়াশোনার জন্য কিভাবে খরচ যোগাবেন। অর্থ যাতে তার মেয়ের শিক্ষার মাঝে এসে না দাড়ায়, তার জন্য যদি সরকার কিংবা সহৃয় ব্যক্তি এগিয়ে আসে তালে তার মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হবে বলে তিনি জানান।